সংসারে নতুন অ’তিথি এসেছে। পুরো ঘর আনন্দে এই সময় মেতে উঠার কথা। কিন্তু যশোরের ধ’র্মতলার সুজলপুরে সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নির বাড়িতে সুখ হারিয়ে গেছে। এখন শুধু শোকের ছায়া।
এই বাড়ির ক্রিকেট খেলুড়ে মে’য়েটি আর নেই। সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নি মা’রা গেছেন হাসপাতা’লের বেডে (ইন্না নিল্লাহি.. রাজিউন)। ২৮ জুলাই ফুটফুটে মে’য়ে সন্তানের মা হয়েছিলেন তিন্নি।
আর দুদিন পরেই মে’য়েকে একা রেখেই চলে গেলেন অসীমের পানে! জন্মেই নিষ্ঠুর বাস্তবতার সঙ্গে পরিচয় হলো তিন্নির নবজাতকের। সব স্বপ্ন অ’পূর্ণ রেখেই সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নির জীবনের ইনিংস আকস্মিকভাবে শেষ!
সন্তান জন্মের দুদিন পরে শ্বা’সক’ষ্ট ও উচ্চ র’ক্তচাপজনিত কারণে মা’রা গেছেন প্রতিভাবান এই নারী ক্রিকেটার। তিন্নি ছিলেন যশোর জে’লা দলের ক্রিকেটার। এছাড়া ঢাকার প্রথম বিভাগে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র এবং প্রিমিয়ার ক্রিকে’টে বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি দলের হয়ে খেলতেন। পরে ক্রিকেট কোচিংয়ের সঙ্গে নিজেকে জ’ড়িত করেছিলেন।
ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমির প্রথম নারী কোচ ছিলেন তিন্নি। কোচিংয়ে বড় আসরে পদচারণার স্বপ্ন দেখছিলেন। যশোরের ক্রিকে’টে কোচ তিন্নি ক্রমশ জনপ্রিয় একটি নাম হয়ে উঠছিল। শহরের মধুসূদন তারা প্রসন্ন (এমএসটিপি) বালিকা বিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিন্নি। কিন্তু সব স্বপ্ন অর্ধেক পথেই থামিয়ে তিন্নি এখন অন্য আকাশের তারা!
তার আকস্মিক মৃ’ত্যুতে সতীর্থ ও নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার সমসাময়িক নারী ক্রিকেটার সাথিরা জাকির জেসি বলছিলেন- ‘খুব ভালো ক্রিকেট খেলতো মে’য়েটি। প্রিমিয়ারে আমি ওর খেলা দেখেছি। প্রতিভাবান একটা মে’য়ে এভাবে হারিয়ে গেল, খুবই ক’ষ্ট লাগছে।’
বার্তা২৪কে তিন্নির বড় ভাই মোহাম্ম’দ শোভন অ’ভিযোগের সুরে বললেন- ‘আমি নিশ্চিত আমা’র বোন ডাক্তারদের অবহেলার শিকার হয়েছে। তার শ্বা’সক’ষ্ট দেখে এত করে ডাক্তারদের বললাম, কিন্তু তারা তো পাত্তাই দিলেন না। বললেন, বাচ্চা হওয়ার সময় অমন নাকি হয়ই। উল্টো ডাক্তার আমাকে বকাবকি করলেন। কিন্তু আমি তো আমা’র বোনকে হারিয়ে ফেললাম।’
যশোর ল্যাবজোন স্পেশালাইজড হাসপাতা’লে চিকিৎসাধীন ছিলেন সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নি। ৩১ আগস্ট শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তিন্নির পরিবার তাকে উন্নততর চিকিৎসার জন্য খুলনায় নেওয়ার চেষ্টা করে।
কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার এতই অবনতি ঘটে যে তাকে এক হাসপাতাল থেকে অন্যত্র স্থা’নান্তরের উপায় ছিল না। ৩১ আগস্ট রাতেই মা’রা যান তিন্নি। ঈদের আনন্দ এবং কন্যা সন্তানের আগমন- পরিবারের সবার হাসি নিভে গেছে তিন্নির আকস্মিক প্রয়াণে!