Breaking News

২৫ সেপ্টেম্বর ফের জে’লে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

দু’র্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটি মা’মলায় ১৭ বছরের কারাদ’ণ্ড ভোগ করতে থাকা খালেদা জিয়াকে ২৫ মাসের মা’থায় গত ২৫ মা’র্চ শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয় সরকার।

করো’নাভাই’রাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে মানবিক দিক বিবেচনায় ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে এ মুক্তি দেয়া হয়। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না, এমন শর্তে সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর সেদিন গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় ওঠেন খালেদা জিয়া। এখন সেখানেই আছেন তিনি। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই এখন সবার মনে প্রশ্ন জাগছে আবারও কি জে’লে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া, নাকি সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াবে।

তার কোনো সদুত্তর জানা না গেলেও একটি আশার সংবাদ জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে খালেদার পরিবারের সদস্যরা তার মুক্তির মেয়াদকাল বাড়াতে লিখিত আবেদন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। সেসময় সরকারপ্রধানের হাতে এ চিঠি পৌঁছে দেয়া হবে।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ খবর জানালেও দায়িত্বশীল কেউ বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মুখ খুলছেন না। বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

তার আগেই মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করবে খালেদার পরিবার। সেজন্য অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ খালেদা জিয়ার চার আইনজীবী তার পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় করে মুক্তির মেয়াদকাল বাড়ানোর আবেদনের একটি খসড়া প্রস্তুত করেছেন।

সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ আবেদন পৌঁছে দেয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্রের দাবি, মুক্তির মেয়াদকাল বাড়ানোই শুধু নয়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে খালেদার পরিবারের সদস্যরা তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্যও আবেদন করবেন।

এসময় খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি চিঠিও দেয়া হবে। নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, মুক্তি দেয়ার পর অ’সুস্থতা বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দিতেও সরকারের হাইকমান্ডের মনোভাব ইতিবাচক দেখা যাচ্ছে।

খালেদা জিয়ার পরিবারও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে সরকারের ক্ষমতাশালী উচ্চপর্যায়ে, যারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদার পরিবারের যোগাযোগের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে কৌশলগত কারণে কোনো পক্ষই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয়।

দায়িত্বশীল একটি সূত্রের তথ্য, যে মাধ্যমে খালেদা মুক্তি পেয়েছিলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নিতে সরকারের সেই মাধ্যমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে পরিবার। এরই মধ্যে একবার বৈঠকও হয়েছে দুপক্ষের। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই খালেদার পরিবার করো’নার অজুহাতে দেশের কোনো হাসপাতা’লে তার চিকিৎসা করাননি।

সূত্রে জানা গেছে, সরাসরি রাজনীতি থেকে অবসরের কথা না বললেও খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে সরকারের পক্ষ থেকে দুটি শর্তের কথা জানানো হয়েছে। প্রথমত লন্ডনে গিয়েও চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে পারবেন না। গুলশানের বাসায় যেভাবে বাস করছেন, লন্ডনেও ঠিক তেমনি থাকবেন।

দ্বিতীয়ত বিদেশিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ থেকে বিরত থাকবেন। লন্ডনে থাকাবস্থায় থাকতে হবে রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতি দেয়া ও সভা-সমাবেশে যোগদান থেকেও। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে খালেদার পরিবার শর্ত মেনেই তাকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা দিতে রাজি থাকলেও বিএনপি প্রধান শর্ত ছাড়াই লন্ডন যেতে চান। যদিও তার এ অবস্থানের বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কবে নাগাদ আবেদন করা হবে জানতে চাইলে এ বিষয়ে তার আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, এটা সরকারের ব্যাপার। আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাপারটি ডিল করবে। অন্যদিকে আম’রা আইনজীবীরা নই, পরিবারের সদস্যরা ব্যাপারটি দেখছেন।

তবে শিগগির খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি। খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হবে কি-না জানতে চাইলে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, তার চিকিৎসা বাংলাদেশে হচ্ছে। হাঁটু অ’পারেশন হয়েছে, সেটার জন্য বিদেশ যেতে হতে পারে।

খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কোনো চিঠি দেয়া হচ্ছে কি-না, এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন বিএনপির এ যুগ্ম-মহাসচিব। খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইস’লাম বলেন, মুক্তির পর তিনি এখন পর্যন্ত কোনো শর্ত ভঙ্গ করেননি। তাই এ ব্যাপারে সরকার কঠোর হবে না বলে আম’রা মনে করি। তার বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার এখনো তেমন উন্নতি হয়নি। চলাফেরাও করতে পারছেন না। মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন তো করতেই হবে। তবে কখন করব সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইস’লাম আলমগীর দীর্ঘদিন ধরেই খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার কথা বলে আসছেন। গত ১ আগস্ট ঈদুল আজহার দিন তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বিদেশে না যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে শর্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার বিদেশে চিকিৎসাই এখন বেশি প্রয়োজন। খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন, সেই সুযোগের অ’পেক্ষায় আছি আম’রা।

About Utsho

Check Also

সেই মা’রিয়াকে নিয়ে খেলায় মা’তলেন ডিসি

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজে’লার হেলতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে পরিবারের সব স্বজন হা’রানো সেই মা’রিয়া সুলতানা এখনও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *