হামা’রী করো’নার কারণে গত ১৭ মা’র্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে এখন তা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। ছুটির কারণে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া যায়নি। গত এপ্রিলে এই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রা’ণঘাতী করো’না প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থগিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে নয়, বরং পরে নেয়ার পরিকল্পনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। করো’না পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে এই পরীক্ষা শুরু হবে।
এইচএসসিতে এবার পরীক্ষার্থী প্রায় ১৩ লাখ। এদিকে করো’নার মধ্যে দেশের প্রায় সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভিন্নভাবে দেখা হচ্ছে। কারণ অ’ভিভাবকরা সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে বেশি চিন্তিত।
করো’না পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত তারা সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে অনিচ্ছুক। তাছাড়া বেশকিছু দেশ একবার স্কুল খুলে দিলেও পরে আবার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। ফলে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে একটু দেরিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে চায় মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, বাস্তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া কঠিন হবে। করো’নার মধ্যেই আম’রা এসএসসির ফল প্রকাশ করেছি।
একাদশে ভর্তি কার্যক্রমও শুরু করতে যাচ্ছি, তবে আ’ট’কে আছে এইচএসসি পরীক্ষা। এখন এইচএসসি পরীক্ষা নিতে হলে কমপক্ষে ১৫ দিন লাগবে। এই সময়ে ২০ থেকে ২৫ লাখ লোকের চলাফেরা বাড়বে। এতে ভীতি থেকেই যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন করো’না থাকলে আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে। আম’রা সবকিছু নিয়েই কাজ করছি, পরিকল্পনা করছি। তবে আরো কিছুদিন সময় নিতে চাই।
এর আগে এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি জানিয়েছিলেন,
করো’নার কারণে স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষার নতুন তারিখ অন্ততপক্ষে পরীক্ষা শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। হুট করে আজকে বলব না যে কালকে পরীক্ষা। যাতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার প্রস্তুতিটুকু আরও ভালো করে নিতে পারেন।
এসময় ঘরব’ন্দি পরীক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে ডা. দীপু মনি বলেছেন, হঠাৎ পরীক্ষা পিছিয়ে গেলে, একটা ভীষণ রকম হতাশা কাজ করে। আমি নিশ্চিত যারা এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাদেরও একই অবস্থা। আপনাদের জায়গায় থাকলে আমিও একই রকম বোধ করতাম।
এই অবস্থায় আমি আপনাদের বলব- একটা পাবলিক পরীক্ষায় যেখানে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেবে। তাদের সঙ্গে যু’ক্ত হবেন পরিবার, শিক্ষকরা। এসব মিলে আরও কয়েক লাখ। আর করো’নার এই সংকটে এতো লক্ষ মানুষকে নিয়ে পরীক্ষার আয়োজন করে এতো স্বাস্থ্য ঝুঁ’কি আম’রা নিতে পারি না।
এদিকে করো’না সংক্রমণের কারণে চলতি বছরের অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষাগুলো অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট অষ্টম শ্রেণি শেষে অনুষ্ঠিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নিয়ে ছয়টি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রস্তাবে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সংকোচন এবং বিষয় কমিয়ে আগামী ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে করো’না পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরীক্ষা ছাড়াই নবম শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা।
ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেড়) উল্লেখ করেছে, বিদ্যমান করো’না পরিস্থিতির কারণে ভা’রত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, যু’ক্তরাজ্য, যু’ক্তরাষ্ট্রসহ ৮৪টি দেশ পাবলিক বা এ ধরনের পরীক্ষা হয় বাতিল নয়তো স্থগিত করেছে।