ভালোবাসা, নরম তুলোর মত আবেগে মোড়ানো, ভাষায় প্রকাশ না করতে পারা স্প’র্শকাতর এক তীব্র অনুভূতির নাম। রঙ, রূপ, গন্ধবিহীন এই তীব্র অনুভূতির এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে, আর সেটি অ’পরের প্রতি তীব্র আকর্ষণ।
এই আকর্ষণের শক্তি এতটাই প্রবল যার টানে অ’পরকে পাশে পেতে মানুষ ছুটে যায় বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, জয় করে সকল প্রতিকূলতাকে, পরিশ্রান্ত ক্লান্ত মানুষ ব্যস্ততা, ক্লান্তি ভুলে প্রিয়জনকে বলে “ভালোবাসি, ভালোবাসি…’’
এক মে’য়ের সারা শরীর পু’ড়ে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে মেয়েটির হাত-পা কে’টে ফেলতে হবে। এরপরও সেই মে’য়েকেই বিয়ে করতে চাইছে তার হবু বর।
সাধারণত এমন ঘটনা সিনেমায় হরহামেশাই ঘটে, কিন্তু বাস্তবে নয়। এবার বাস্তবেই এই সিনেম্যাটিক ঘটনাটি ঘটল। এটি পার্শ্ববর্তী দেশ ভা’রতের ঘটনা।
ঘটনাটি হিরল নামক একটি মেয়ের এবং চিরাগ নামক একটি ছে’লেকে কেন্দ্র করে। যারা বুঝিয়ে দিয়েছেন ভালোবাসার কাছে সব সুন্দর-অ’সুন্দরের হিসাব-নিকাশ হার মানে।
জানা গেছে, জামনগর জে’লার ডাবাসন গ্রামের বাসিন্দা ১৮ বছরের হিরল। একই এলাকার চিরাগের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। বিয়ের ঠিক কদিন আগেই কাপড় শুকানোর জন্য জানলার কাছে যায় হিরল। সে হাত বাইরে বের করতেই বিদ্যুতের তারে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তার হাত এবং পায়ের মধ্যে বিদ্যুৎ ছড়িয়ে পড়ে এবং পু’ড়ে যায়।
হিরলকে তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী হাসপাতা’লে ভর্তি করা হয়। সেখানে শুরু হয় তার চিকিৎসা। যদিও কয়েকদিন পরই চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দেন। তাকে আ’মেদাবাদের সিভিল হাসপাতা’লে স্থা’নান্তর করার পরাম’র্শ দেন।
সেখানে ডাক্তাররা জানান, হিরলের ডান হাত এবং দুটি পায়ের হাঁটু কে’টে বাদ দিতে হবে। তবে দুর্ঘ’টনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে এখানে নিয়ে আসলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত।
ঘটনাটি হিরলের অ’ভিভাবককে জানালে তারা হতাশ হয়ে পড়েন। এখন তাদের মেয়েকে কে বিয়ে করবে? হিরলের বাকিটা জীবন কেমনভাবে কাটবে? হিরলের বাবা-মাকে চিন্তার মধ্যে দেখে চিরাগ বলেন, সে হিরলকেই বিয়ে করবে। পরে চিরাগের সিদ্ধান্তকে তার বাবা-মা’ও সম’র্থন করেন।
হিরল জানান, তিন থেকে চার দিন আমা’র কোনো জ্ঞান ছিল না। যখন জ্ঞান আসে তখন বুঝতে পারলাম যে আমা’র হাত-পা কে’টে ফেলা হবে। আমি ভেঙে পড়ি এবং পরিবারের কাছে মৃ’ত্যু চাই। কিন্তু চিরাগের সিদ্ধান্ত জানার পর মনে হয়েছে এখনো পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে। আমি চিরাগের প্রতি গর্বিত এবং হাসপাতা’লে চিরাগ আমা’র সঙ্গে ছিলেন সব সময়।
তিনি হাসপাতা’লে আমা’র সঙ্গেই থাকেন যাতে সেবা-যত্ন করতে পারেন। চিরাগের মাতা-পিতা আমাকে এই অবস্থায় স্বীকার করছে এটাও আমা’র সৌভাগ্য- বলেন হিরল।