বিয়ের পর প্রথম রাতে আমি ঘরে ঢুকতেই আমা’র বউ আমাকে প্রশ্ন করলো ঘড়িতে কটা বাজে ? নতুন বউয়ের মুখে এরকম প্রশ্ন শুনবো সেটা ভাবতে পারিনি। বরং একটু অ’বাকই হয়েছিলাম। তখন আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ১২.৩০।
আমি তখন তার পাশে বসলাম কিছু কথা বলার জন্য। তাকে বললাম যে আমি এই মুহুর্তে বিয়ে করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। শুধুমাত্র আমা’র মায়ের কথা রাখতে এই বিয়ে করেছি। কিন্তু এমন নয় যে আমা’র সঙ্গে কারোর স’ম্পর্ক আছে।
আমি মানসিক ভাবে প্রস্তুত নয়। আমা’র কথা শেষ হওয়ার ঠিক পরের মুহুর্তে সে আমা’র জামা’র কলার চেপে ধরে বলে ”কেন আমাকে বিয়ে করলে ? মায়ের প্রতি মি’থ্যে ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে আমা’র জীবন কেন নষ্ট করলে ?
আমাকে আগেই বলে দিতে পারতে বিয়ের জন্য তুমি রাজি নও। তাহলে আমি নিজেই এই বিয়ে ভেঙে দিতাম। এখন যখন বিয়ে হয়েই গেছে তখন কিছু করার নেই। আমি এইসব কথা জানার পর নিজেকে আপনার স্ত্রী’ হিসাবে মানতে পারবনা।
আপনি আজ থেকে নীচে ঘুমবেন আর আমি খাটে।” কথা গু’লি বলে সে মাটিতে বালিশ ফেলে দিয়ে নিজে খাটে শুয়ে পড়লো। নীচে শুয়ে এদিকে আমাকে মশা কামড়াচ্ছে, ঘুম আসছে না। এইভাবে জেগে থাকতে থাকতে কখন ঘুম এসে গেছে বুঝতেই পারিনি।
হঠাত মাঝরাতে ঘুম ভাঙ্গতে দেখি গায়ে কম্বল আর পাশে মশার কয়েল জ্বালানো রয়েছে। তখন মনে মনে ভাবলাম আমি আমা’র বউকে যতটা রাগি ভেবেছিলাম ততটাও রাগি নয়। তার মধ্যে মায়াও আছে। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মে’য়েটা আমা’র জন্য চা নিয়ে এসেছে।
তখন তার দিকে তাকিয়ে দেখি আমা’র বউ তো খুব সুন্দরী। আমি তার দিকে অ’পলকে তাকিয়ে থাকলাম। হঠাত শুনতে পেলাম এক বিকট শব্দ। তাকিয়ে দেখি সে পড়ে গিয়ে চোখ বন্ধ করে রয়েছে। কাছে যেতেই বুঝলাম ভালোই ব্যাথা পেয়েছে।
তাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শোয়ালাম। তারপরই বুঝলাম আমি তার প্রে’মে পড়েছি। তখন থেকেই চলতে থাকে আমাদের প্রে’ম। আম’রা হয়ে উঠি সুখি দম্পতি। এখন আমাদের বিয়ের ২বছর হয়ে গেছে। আমা’র বউ এখন গর্ভবতী। আজই তার ডেলিভা’রি।
তাকে ভর্তি করেছি হাসপাতা’লে। নার্স এসে খবর দেয় আমাদের একটা সুন্দর ফুটফুটে মে’য়ে হয়েছে। তাদের দুজনকে দেখতে গিয়ে দেখি বাচ্ছাটা নড়াচড়া করছে কিন্তু আমা’র বউটা চোখ খুলছেনা। শুনেছি অনেকের বাচ্ছা হতে গিয়ে মা মা’রা যায়।
এই কথাটা মনে পড়তেই আমি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকি। তারপর শুনি আমা’র কানে সে ফিসফিস করে বলছে ”কি ভেবেছিলে ? আমি ম’রে গেছি ? আমি ম’রে গেলে তোমাকে জ্বালাবে কে ?” তারপর আমি তাকে জড়িয়ে ধরে থাকি। এইভাবেই চলতে থাকে আমাদের সুখি জীবন।