গোপালগঞ্জের প্রধান দুটি নদী মধুমতি ও এমবিআর ক্যানেলের পানি বিপদসীমা’র নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তারপরও জে’লার ১০০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রতিদিন নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির ফলে নতুন নতুন এলকা প্লাবিত হচ্ছে।
ইতোমধ্যে নিন্মাঞ্চলে তলিয়েছে মাছের ঘের, মুরগীর খামা’র, আউস ও আমন ধান। নষ্ট হয়েছে রোপা আমনের বীজতলা। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন গ্রামের রাস্তা ঘাটও। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, এমবিআর ক্যানেলের পানি সবেমাত্র বিপদসীমায় পৌঁছেছে।
মধুমতি নদীর পানি বিপদ সীমা’র ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মধুমতি নদীর পানি বৃদ্ধি অ’পরিবর্তীত থাকলেও এমবিআর ক্যানেলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হয়েছে গোপালগঞ্জ সদর, মুকুসুদপুর, কাশিয়ানী ও কোটালীপাড়া উপজে’লা নিন্মাঞ্চল। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
এ পর্যন্ত জে’লার অর্ধশত গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিব’ন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি ডুবে সৃষ্টি হয়েছে জন দুর্ভোগ। ব’ন্যার পানিতে ভেসে গেছে সহ¯্রাধিক মাছের ঘের।
অনেকেই নেট ব্যাবহার করে বাঁ’চানোর চেষ্টা করছেন মাছের ঘের। নষ্ট হয়েছে সবজি ক্ষেত। এছাড়াও পানি বৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ কৃষকই পাট কাটতে পারছেন না। ফলে পাট চাষীরা রয়েছেন ক্ষতির আশংকায়।
ব’ন্যাকবলিত এলাকার কয়েকশ পরিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইউপি পরিষদ ভবন, রাস্থার পাশসহ উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। পরিবার পরিজন ও গবাদিপশু দিয়ে অবর্নণীয় দুঃখ ক’ষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তারা।
অ’পরদিকে মধুমতি নদী ও বিলরুট ক্যানেলের গোপালগঞ্জ সদর উপজে’লার মানিকদহ, উরফি, হরিদাসপুর, ইছাখালি, চর ঘাঘা ও ধলইতলায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে মাকিদাহ এলাকার একটি গরুত্বপূর্ণ রাস্তা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে।
এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পশ্চিম গোপালগঞ্জ ও নিকটবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। করো’নার মধ্যে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, বিলরুট ক্যানেলের পানি বিপদসীমায় পৌঁছেছে। মধুমতি নদীর পানি বিপদ সীমা’র ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া যেসকল স্থানে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে সে সকল স্থানে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওই কর্মক’র্তা।
গোপালগঞ্জের জে’লা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, সার্বক্ষণিক জে’লার ব’ন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। ব’ন্যার্তদের জন্য ১৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রকেন্দ্রগুলোতে এ পর্যন্ত ৩০৭৭জন আশ্রয় নিয়েছে।
তাদের খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত ব’ন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে ততদিন পর্যন্ত সরকারি মানবিক খাদ্য সহায়তা অব্যাহত থাকবে।