Breaking News

নতুন ষড়যন্ত্রের শিকার শিপ্রা

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদের সহকর্মী শিপ্রা দেবনাথ ‘নতুন ষড়যন্ত্রের’ শিকার বলে মনে করছে তার পরিবার। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে টার্গেট করে একটি গ্রুপ সক্রিয় হয়েছে। শিপ্রার ব্যক্তিগত চরিত্রহননের চেষ্টা করছে তারা।

শুধু ভু’য়া আইডি নয়, অনেকে নিজের আইডি থেকেও শিপ্রাকে আক্রমণ করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কারও কারও আচরণে ম’র্মাহত শিপ্রার পরিবার। সিনহার ‘জাস্ট গো’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ছবি ও ভিডিও দিয়ে সমালোচনায় শিপ্রা ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ হয়ে পড়েছেন।

শিপ্রা জানান, তিনি বুঝতে পারেননি যে সাধারণ মানুষের এমন প্রতিক্রিয়া হবে। তাই দ্রুতই তিনি সেই ভিডিও সরিয়ে নিয়েছেন। শিপ্রার ছোট ভাই শুভজিৎ কুমা’র দেবনাথ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে শিপ্রার ব্যক্তিগত ছবি দিয়ে তাকে ‘খা’রাপ’ বলে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করছে।

বিশেষ করে গত বুধবার শিপ্রা যখন জাস্ট গো ইউটিউব চ্যানেলে কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেন, তখন থেকে খা’রাপ মানসিকতার কিছু মানুষের আক্রমণের শিকার হন।’

তিনি বলেন, কেন এই সময় ওই ডকুমেন্টারির ভিডিও আপলোড করা হয়েছে, সেটার একটি কারণ রয়েছে। ঘটনার পর অনেকে ভু’য়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে জাস্ট গো নাম দিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করে ইউটিউবে ছেড়ে দেয়।

এটা প্রচার হওয়ার পর অনেকের মধ্যে বি’ভ্রান্তি দেখা যায়। এ কারণে শিপ্রা তার কাছে থাকা কিছু ছবি ও ভিডিও ইউটিউবে ছাড়েন। সেই ছবি ও ভিডিওর কিছু কিছু গুগল ড্রাইভে ছিল।

অনেকে হয়তো মনে করেছে, ওই ডকুমেন্টারিতে সিনহা হ’ত্যার বিচার চাইবেন শিপ্রা। চোখে জল থাকবে। কা’ন্নাকাটি করে আবেগতাড়িত হবেন। ডকুমেন্টারি তৈরির ক্ষেত্রে সেটা শিপ্রা চাননি। তিনি সিনহার স্বপ্ন এই ডকুমেন্টারির মাধ্যমে কিছুটা হলেও বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছেন।

শুভজিৎ আরও বলেন, সিনহা ছিলেন প্রা’ণচঞ্চল। তার স্বপ্নের প্রকল্প ছিল জাস্ট গো। ওই ডকুমেন্টারিতে সিনহার মনোভাবকে গুরুত্ব দিয়েছেন শিপ্রা। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়তো অনেকেই তার হাসিমাখা মুখ ভালো’ভাবে নেয়নি। অনেকের আ’ঘাতে শিপ্রা এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার মা-বাবা অ’সুস্থ হয়ে পড়েছেন।

তিনি বলেন, একজন পু’লিশ সুপারও তার আইডি থেকে শিপ্রার ব্যক্তিগত ছবি পোস্ট করেছেন। এটা করার পেছনে অবশ্যই অশুভ উদ্দেশ্য রয়েছে। হঠাৎ কেন তারা শিপ্রার ব্যক্তিগত বিষয় সামনে আনবেন। সত্যকে আড়াল করে অন্য কিছু প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন তারা।

পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় আইআই’এসটিতে পড়াশোনা করছেন শুভজিৎ। তার বাবা সাবেক বিজিবি সদস্য। শুভজিৎ আরও জানান, কক্সবাজার যাওয়ার আগে শিপ্রা জানান, তিন মাসের মধ্যে তারা কাজটি শেষ করবেন। সম্ভব হলে আরও তাড়াতাড়ি শেষ করে ফিরে আসবেন।

শুভজিৎ জানান, কক্সবাজার থাকাকালে শিপ্রার সঙ্গে প্রায়ই কথা হতো। ঈদের দিন সকালে শিপ্রা জানান, ‘সিনহা ভাই মা’রা গেছেন। সিফাত কোথায় রয়েছে আমা’র জানা নেই। আমি খুব খা’রাপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। সিনহার ঘটনাসহ পুরো বিষয়টি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’ শুভজিৎ জানান, শিপ্রা জামিন পাওয়ার পরও কয়েক দফায় তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তার পাশে দাঁড়াতে কক্সবাজারে তাদের স্বজনরা গেছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, একটি অসাধু মহল শিপ্রার ব্যক্তিগত বিষয় সামনে এনে আসল ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করছে। তারা যেটা করছে, এটা সাইবার ক্রা’ইম। কেন, কারা এটা করে যাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে আরও বিশদ ত’দন্ত চলছে।

৩১ জুলাই টেকনাফের মেরিন ড্রাইভে সিনহা নি’হত হওয়ার পর ওই রাতেই নীলিমা রিসোর্টে অ’ভিযান চালায় পু’লিশ। রিসোর্টে অ’ভিযানের ঘটনায় হিমছড়ি পু’লিশ ফাঁড়ির এসআই শফিকুল ইস’লাম বাদী হয়ে মা’মলা করেন। পরে শিপ্রা দেবনাথকে আ’সামি করে মা’মলার জ’ব্দ তালিকায় দুটি ভোদকা, তিনটি ভ্যাট-৬৯ দেশি ম’দ, এক পুরিয়া গাঁজা ও পানির বোতলে এক লিটার দেশীয় চোলাই ম’দ দেখানো হয়েছে।

এটাকেও সাজানো মা’মলা বলে মনে করছেন অনেকে। শিপ্রার পরিবার বলছে, ওই মা’মলাও একটা ষড়যন্ত্র ছিল। শিপ্রাকে মা’দক নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রে’প্তার দেখালেও তার সহকর্মী তাহসিম রিফাত নূরকে ছেড়ে দেয় পু’লিশ। পরে জামিনে কারাগার থেকে ছাড়া পান শিপ্রা।

জানা গেছে, নীলিমা রিসোর্টে অ’ভিযান চালানোর সময় সিনহার কক্ষ থেকে ল্যাপটপ ও হার্ডডিস্ক গায়েব হয়ে যায়। পু’লিশের জ’ব্দ তালিকায় তা দেখানো হয়নি। কেউ হার্ডডিস্ক থেকে শিপ্রার ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে চরিত্রহননের চেষ্টা করছে কিনা, তা ত’দন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা।

ডকুমেন্টারি তৈরির কাজে শিপ্রা দেবনাথ, তাহসিম সিফাত নূর ও সাহেদুল ইস’লাম সিফাতকে নিয়ে নীলিমা রিসোর্টে এক মাস ধরে অবস্থান করছিলেন সিনহা।

অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছে- শিপ্রা

শিপ্রা দেবনাথ গতকাল শুক্রবার রাতে বলেন, ‘যখন দেখলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় নকল ডকুমেন্টারি তৈরি করে জাস্ট গো নামে অনেকে প্রচার করছেন, তখন ভাবলাম আমাদের স্বপ্ন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তখন চিন্তা করলাম আসল তথ্য সবাইকে জানাই।

সেই জায়গা থেকেই ভিডিও আপলোড করেছিলাম। যখন দেখলাম মানুষ এটা ভালো’ভাবে নেয়নি, তখন ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তা ডিলিট করে দিয়েছি। অনেকে ধারণা করেছিল, এটা আমা’র ব্যবসা ছিল। অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছিল। তাই তাদের সম্মান জানিয়ে ওই ভিডিও সরিয়ে ফেলেছি।’

শিপ্রা আরও বলেন, ‘এটা ঠিক আমি পাবলিক ফিগার নই। জাস্ট গো সোশ্যাল মিডিয়ায় যাওয়ার পর রাতারাতি পাবলিক ফিগারে পরিণত হই। এটা আমি চাইনি। আমাদের স্বপ্ন বাঁ’চাতে তা আপলোড করেছিলাম। কী’ভাবে এ ধরনের কাজে সাধারণ মানুষকে হ্যান্ডেল করতে হয়, এটা আমা’র জানা ছিল না। এখনও নেই। আমি সাধারণ মে’য়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কারও কারও আচরণে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়।’

শিপ্রা আরও বলেন, কক্সবাজারে যে ঘটনা ঘটেছে, সবাই তার ন্যায়বিচার চাচ্ছে। তিনিও ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায় রয়েছেন। এর বাইরে তার আর কোনো কথা নেই।
সুত্র: সমকাল

About Utsho

Check Also

সেই মা’রিয়াকে নিয়ে খেলায় মা’তলেন ডিসি

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজে’লার হেলতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে পরিবারের সব স্বজন হা’রানো সেই মা’রিয়া সুলতানা এখনও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *