শরণখোলার সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদে কোষ্টগার্ডের দুই সদস্য জেলেদের মারধর করে নৌকা থেকে জোর পূর্বক ইলিশ লুট করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাত ১২ টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে বলে জেলেরা জানান। এ ঘটনায় বুধবার সুপতি কন্টিজেন্টের জড়িত ওই দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে কোষ্টগার্ড।
পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ চরদুয়ানী গ্রামের আলম হাওলাদারের ছেলে জেলে এমাদুল হক জানান, মঙ্গলবার রাতে সুপতি কন্টিজেন্টের মোঃ কাওছার ও মোঃ ইব্রাহিম নামের দুই কোষ্ট গার্ড সদস্য তার মাছ ধরা ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে টহল দেয়ার কথা বলে বলেশ্বর নদীতে নিয়ে যায়। এরপর রাত ১২ টা থেকে ভোর হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন জেলে নৌকায় গিয়ে মারধর করে নগদ টাকাসহ ইলিশ মাছ জোর করে নিয়ে আসে।
কোষ্ট গার্ড সদস্যরা এসময় পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ চরদুয়ানী গ্রামের খলিল শিকদারের ছেলে রুবেল শিকদারের নৌকা থেকে ৮০ টি ইলিশ, মোঃ লতিফ খানের ছেলে বাবুল খানের নৌকা থেকে ৫টি ইলিশ, বেলায়েত খানের ছেলে রনি খানের নৌকা থেকে ১১টি ইলিশ, চাঁন মিয়া খানের ছেলে রুবেল খানের নৌকা থেকে ৫টি ইলিশ, হামেজ ঘরামীর ছেলে ছোরাপ ঘরামীর নৌকা থেকে ৫টি ইলিশ মাছ লুট করে নেয়। এসময় আলতাফ আকনের ছেলে আব্বাস আকনের নৌকায় মাছ না পেয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা ধার্য্য করেন তারা। এছাড়া জেলেদের নৌকা প্রতি ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবী করে বলে ভুক্তভোগী ওই জেলেরা জানান।
পরদিন সকালে জেলেরা মাছ লুটের ঘটনাটি বন বিভাগ ও কোষ্টগার্র্ড পশ্চিম জোনের মোংলা কার্যলয়ের কর্মকর্তাদের জানান। খবর পেয়ে সেখান থেকে কোষ্ট গার্ডের একটি দল ঘটনাস্থল সুপতি কন্টিজেন্টে এসে জেলেদের কাছ থেকে শুনে ঘটনার সত্যতা জানতে পারেন। পরে তারা জেলেদের ইলিশ মাছ ফেরৎ দেন এবং কোষ্ট গার্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বস্ত করেন।
এদিকে জেলে এমাদুল হক ওই দুই সদস্যকে চিহ্নিত করে ঘটনাটি ফাঁস করে দিলে তাকে বেদম মারধর করে আহত করে কোষ্টগার্ড সদস্যরা। বর্তমানে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এমাদুল সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো জয়নাল আবেদীন জানান, মাছ লুটের ঘটনাটি বুধবার সকালে জেলেরা তাদের জ্ঞানপাড়া ও চান্দেশ্বর টহলফাঁড়ির বনরক্ষীদের কাছে জানান। পরে ওই দুই টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জেলেদের মহাজনরা তাকে ফোন করে এ ঘটনা জানান।
জানতে চাইলে কোষ্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে ইতিমধ্যে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি তদন্তে একটি কমিটিও কাজ শুরু করে দিয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।