Breaking News

কাদেরকে নিয়ে অস্বস্তি আওয়ামী লীগে

টানা দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের এবং একইসাথে তিনি সেতু মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও বটে।

কিন্তু কাদেরকে নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের মধ্যেই অস্বস্তি শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যেই বলছেন যে, এই সঙ্কট’কালীন সময়ে একজন সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা যেরকম হওয়া উচিত সেরকম ভূমিকা রাখতে পারছেন না ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে সম্প্রতি এমনই একটি খবর প্রচার করেছে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ইনসাইডার। করো’না সঙ্কটের শুরু থেকেই ওবায়দুল কাদের ঘরব’ন্দি রয়েছেন এবং ঘরে থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন বার্তা দিচ্ছেন, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন, মাঝে মাঝে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যু’ক্ত হচ্ছেন।

কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকের কাজ এই সীমিত পরিসরে কতটুকু যৌক্তিক সেই প্রশ্ন উঠেছে। অবশ্য করো’না সঙ্কটের আগে থেকেই ওবায়দুল কাদের শারীরিকভাবে অ’সুস্থ ছিলেন।

হৃদরোগে আ’ক্রান্ত হয়ে তিনি প্রথমে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে যান। সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃ’ত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসেন। এরপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে তিনি কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।

কিন্তু করো’না সংক্রমণের কিছুদিন আগে তিনি আবারও অ’সুস্থ হয়ে হাসপাতা’লে ভর্তি হয়েছিলেন। এই কারণেই করো’না সঙ্কটের শুরু থেকেই তিনি নিজেকে ঘরব’ন্দি করে রেখেছেন। কিন্তু চার মাসের বেশি সময় ধরে তাঁর ঘরব’ন্দি হয়ে থাকার ফলে আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত স্থবির হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সাধারণ সম্পাদক হলেন দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং সভাপতির ইচ্ছা-অনিচ্ছা-আকাঙ্ক্ষাগুলো মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব দলের সাধারণ সম্পাদকের। কিন্তু গত সাড়ে চার মাসে ওবায়দুল কাদের আনুষ্ঠানিক ভিডিও বার্তা এবং আনুষ্ঠানিক বক্তব্য ছাড়া তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেননি এবং সারাদেশের সাংগঠনিক শৃঙ্খলাগুলোও তিনি দেখভাল করতে পারেননি।

এইসময় অনেকগুলো বিতর্ক তৈরি হয়েছে যেগুলো নিয়ে আওয়ামী লীগের বক্তব্য স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। বিশেষ করে প্রতারক সাহেদ কেলেঙ্কারির পর আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে যে, সাহেদ কোন দরজা দিয়ে দলে ঢুকলো।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, সাহেদরা কোন দরজা দিয়ে ঢোকে সেটা চিহ্নিত করতে হবে এবং সেই দরজা বন্ধ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যেখানে উপকমিটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন, সেখানে সাহেদ আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য হন কিভাবে সেই প্রশ্ন উঠেছে। দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সাহেদ কিভাবে দেখা করেছেন সেই প্রশ্নও দলের মধ্যে এসেছে।

দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের ভেতর অনুপ্রবেশকারীদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলছেন এবং এরকম একটি তালিকা করেও সাংগঠনিক সম্পাদকদের দেওয়া হয়েছিল।

আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা বলেন যে, এই তালিকা অনুযায়ী দলে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা, তাঁদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব দলের সাধারণ সম্পাদকের। কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদক এই দায়িত্ব কতটুকু পালন করতে পেরেছেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।

উল্লেখ্য অনেকেই অ’ভিযোগ করছেন যে, ওবায়দুল কাদের দলের সিনিয়র নেতাদেরকে একত্রিত করে করো’নার সঙ্কটের সময়ে পুরো দলকে মাঠে নামানোর ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতার পরিচয় দিয়েছেন। দলের যারা জনপ্রিয় গুরুত্বপূর্ণ হেভিওয়েট নেতা আছেন তাঁদেরকে এই করো’নার সময়ে মাঠে নামানো বা সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে নামানোয় উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা অনেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ।

তাছাড়া এই সময়ে তৃণমূলের অনেকের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগের আঙুল উঠেছে। সেই অ’ভিযোগের প্রেক্ষিতে দলের কার্যকর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদেরের সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

তবে আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করেন যে, ওবায়দুল কাদের সবসময় একজন কর্মীবান্ধব নেতা। যখন তিনি সুস্থ ছিলেন তখন সবসময় তিনি কর্মীদের জন্যে দেশের এই প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন। কর্মীদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রেখেছেন। কিন্তু এই করো’না সঙ্কটের সময়ে তাঁর ঘরব’ন্দি থাকা’টা একটি সাময়িক ব্যবস্থাপনা। ঘরে থাকলেও তিনি টেলিফোনে বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের সঙ্গে যু’ক্ত আছেন।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের বি’রুদ্ধে আসা অ’ভিযোগের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তিকে সচল রাখা এবং দলের শৃঙ্খলা বিরোধী তৎপরতাকে প্রবলভাবে প্রতিহত করার বিষয়টি ওবায়দুল কাদের কতটুকু দক্ষতার সঙ্গে পালন করতে পেরেছেন তা নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের মাঝেই অস্বস্তি আছে।

তথ্যসুত্র: বাংলা ইনসাইডার

About Utsho

Check Also

সেই মা’রিয়াকে নিয়ে খেলায় মা’তলেন ডিসি

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজে’লার হেলতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে পরিবারের সব স্বজন হা’রানো সেই মা’রিয়া সুলতানা এখনও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *