পৃথিবীর বাইরে জনবসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, লাল গ্রহ হিসেবে পরিচিত মঙ্গল গ্রহ। অনেক বছর ধরে গ্রহটিতে মানুষের বসবাসের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। নাসার একাধিক রোভা’র অর্থাৎ রোবটযান গ্রহটিতে কাজ করছে।
তবে এবার মঙ্গল গ্রহে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিশন শুরু করেছে মা’র্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। আজ বৃহস্পতিবার পৃথিবী থেকে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে নাসার নতুন রোভা’র ‘পারসিভিয়ারেন্স’।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আটলাস ভি-৫৪১ রকে’টে চেপে মঙ্গলের দিকে উড়ে গেছে পারসিভিয়ারেন্স রোভা’র। মঙ্গল গ্রহে পৌঁছাতে সময় লাগবে ৭ মাস। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করবে পারসিভিয়ারেন্স।
মঙ্গল গ্রহে এটি নাসার সর্বাধুনিক অ’ভিযান হতে যাচ্ছে। কেননা এত উন্নত প্রযু’ক্তি দিয়ে আর কোনো রোবটযান তৈরি হয়নি এর আগে। মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসের সম্ভাবনা জানতে গ্রহটিতে অ’তীতে প্রা’ণের অস্তিত্ব ছিল কিনা, তা জানাটা জরুরি। গত ২০ বছর ধরে তা জানার চেষ্টা চলছে। এবার সেই প্রশ্নের উত্তর জানানোর কাজটিই করবে পারসিভিয়ারেন্স।
এই রোভা’রে ২৩টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা, মাইক্রোফোনসহ প্রচুর ছোটখাটো যন্ত্র রয়েছে। যা মঙ্গলের নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে নমুনা সংগ্রহের পর প্রাথমিক বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট পাঠাবে নাসার দপ্তরে। যেহেতু রোভা’রটি জৈব ও রাসায়নিক বিশ্লেষণের কাজ করবে, তাই গ্রহটিতে প্রা’ণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা অনেকটাই স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
পারসিভিয়ারেন্স রোভা’র তৈরি করেছে নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল)। মঙ্গলের মাটি খুঁড়ে নমুনা জোগাড় করে আনার জন্য এতে রয়েছে ৪৩টি টিউব এবং ৭ ফুট লম্বা দুটি রোবোটিক বাহু।
অ’ত্যাধুনিক এই রোভা’রে ৩টি রোবট সিস্টেম রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ৪ পাউন্ড ওজনের ছোট্ট একটি হেলিকপ্টার, যা মঙ্গলগ্রহে উড়ে গবেষণা চালাতে পারবে। এছাড়া প্রথমবারের মতো কোনো ভীন গ্রহে রোবটযান অবতরণের সরাসরি দৃশ্য পৃথিবীতে বসে দেখতে পারবেন নাসার বিজ্ঞানীরা। মঙ্গল গ্রহে অবতরণের লাইভ ফুটেজ দেখানোর জন্য ৬টি ক্যামেরা ব্যবহার করবে এই রোভা’র। ২.৭ বিলিয়ন মা’র্কিন ডলার ব্যয়ে মঙ্গল গ্রহে এই অ’ভিযান শুরু করেছে নাসা।