Breaking News

এতো মেধাবী হয়েও অন্ধকার জগতে ওরা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের অ’ভিযোগে গ্রে’প্তার হয়ে পু’লিশ রি’মান্ডে আছেন অ’পরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার। পিএইচডি করছেন চীনের উহানে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন আরেক নারী রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন ওরফে তূর্ণা আহসান। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতারণার অ’ভিযোগে গত সপ্তাহে ১২ নাইজেরিয়ানের সঙ্গে গ্রে’প্তার হন এই তরুণী।

করো’না পরীক্ষা জালিয়াতির আ’লোচিত মা’মলায় গ্রে’প্তার হয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিটের রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনা চৌধুরী। সরকারি কর্মক’র্তা হয়েও স্বামী আরিফ চৌধুরীর জেকেজি হেলথকেয়ার, যা জালিয়াতিতে জ’ড়িত বলে অ’ভিযোগ, তার আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।

সাম্প্রতিক আরো কিছু আ’লোচিত ঘটনার ত’দন্তের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, করো’নাকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং চিকিৎসা’সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের ব্যবহার করে জালিয়াতি ঘটছে। দ্রুত বড়লোক হওয়ার প্রলো’ভনে মেধাবী ও প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও কতিপয় নারী অন্ধকারাচ্ছন্ন জগতে জড়িয়ে পড়ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শারমিন জাহান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস’লামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। স্নাতকোত্তর শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার পদে যোগ দেন।

পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে তিনি মহিলা ও শি’শু বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য পদে ছিলেন। এর আগের কমিটিতে একই উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন শারমিন, যদিও এখন কোনো পদ নেই।

জানা গেছে, শারমিন জাহান ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি গবেষণার জন্য শিক্ষা ছুটি নিয়ে চীনের উহানে যান। সেখানে থাকতেই ব্যবসা শুরু করেন তিনি। গত ডিসেম্বরে করো’নার কারণে বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন। তাঁর পিএইচডি গবেষণা এখনো শেষ হয়নি। তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসা করছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শারমিন ম’র্যাদাসম্পন্ন অবস্থানে থাকলেও রাতারাতি বড়লোক হওয়ার জন্য নকল মাস্ক সরবরাহের কারবার শুরু করেন। অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রলো’ভনে সাড়া দিয়ে নিজের প্রভাব খাটিয়ে করছিলেন এই কারবার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গো’লাম রাব্বানী বলেন, ‘অ’পরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স’ম্পর্ক নেই। এটার মালিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মক’র্তা পদে চাকরিরত একজন। তাঁর বি’রুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। তাঁর অ’প’রাধ প্রমাণ সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ফরমাল কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি বা ব্যবসা করার সুযোগ নেই।’

তূর্ণা আহসান নামে ফেসবুক আইডিতে তিনি ‘বিজয়লক্ষ্মী নারী’ গ্রুপ চালাতেন রাহাত আরা। টেলিভিশন ট’ক শোতেও উপস্থিত হয়েছেন অনেকবার। ফেসবুকে বন্ধু হয়ে উপহার পাঠানোর নামে প্রতারকচক্রের সঙ্গে জ’ড়িত ছিলেন তিনি। কাস্টমস কমিশনার হিসেবে পরিচয় দিয়ে টাকা আদায় করতেন রাহাত আরা।

অ’প’রাধ ত’দন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মক’র্তারা বলছেন, ছদ্মনামে ফেসবুকে নিজেকে উপস্থাপনের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে টাকার মালিক হতে অ’প’রাধীচক্রটির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন রাহাত আরা।

সিআইডির অ’তিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, রাহাত আরা খানম ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন অ্যান্ড লাইব্রেরি সায়েন্সে পড়ালেখা শেষে চাকরি খুঁজছিলেন। ওই সময় নাইজেরিয়ান চক্রটি অফিস খুলে লোক নিয়োগ দেওয়া শুরু করে। তিনি সেখানে চাকরি নেন। এই চক্র ফেসবুকে বন্ধুত্বের পর দামি উপহার পাঠানোর নামে প্রতারণা করে গত দুই মাসে পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

গত ২১ জুলাই পল্লবী বেনারসি পল্লীর ওই ছয়তলা ভবনে অ’ভিযান চালিয়ে রাহাতসহ ১২ নাইজেরিয়ানকে গ্রে’প্তার করে সিআইডি। ভবনের দ্বিতীয় তলায় তাদের অফিস। চতুর্থ তলায় থাকত বিদেশিরা আর ষষ্ঠ তলায় থাকতেন রাহাত আরা খানম। চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে বন্ধুত্বের একপর্যায়ে কাস্টমস কমিশনারের পরিচয়ে রাহাত আরা খানমকে দিয়ে ফোন করানো হতো।

গত বুধবার রাহাত আরার মতো একই রকম প্রতারক দুই নাইজেরিয়ানের সঙ্গে ধ’রা পড়েন নূপুর খাতুন নামে আরেক তরুণী। পু’লিশের সাইবার ক্রা’ইম ইউনিটের কর্মক’র্তারা জানান, নূপুরও কাস্টমস কর্মক’র্তা সেজে প্রতারণা করছিলেন। তাঁর ব্যাপারে ত’দন্ত চলছে।

গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারে অ’ভিযান চালিয়ে পু’লিশ প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী আরিফ চৌধুরীকে গ্রে’প্তারের পর তাঁর চিকিৎসক স্ত্রী’ সাবরিনার নাম উঠে আসে। গত ১২ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাবরিনাকে গ্রে’প্তার করে পু’লিশ। এরপর দুই দফায় রি’মান্ডে নেওয়া হয়। তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিটের রেজিস্ট্রার। তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জেকেজি হেলথকেয়ার ১৫ হাজার ৪৬০ জনের করো’না পরীক্ষার ভু’য়া রিপোর্ট দিয়েছে।

পু’লিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অ’তিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ত’দন্তে জেকেজির আহ্বায়ক হিসেবে ডা. সাবরিনা চৌধুরীর সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ডিবি কর্মক’র্তারা বলছেন, মেধাবী চিকিৎসক সাবরিনা মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পরিচিত মেধাবী মুখ ছিলেন। কিন্তু দ্রুততম সময়ের মধ্যে টাকা আয়ের জন্য তিনি করো’না পরীক্ষা জালিয়াতিতে সহায়তা করেন। সহযোগীরা সাবরিনাকে ব্যবহার করে অ’পকর্ম চালান।

About Utsho

Check Also

সেই মা’রিয়াকে নিয়ে খেলায় মা’তলেন ডিসি

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজে’লার হেলতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে পরিবারের সব স্বজন হা’রানো সেই মা’রিয়া সুলতানা এখনও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *