আদতে মাতৃতান্ত্রিক এই গোষ্ঠীতে মহিলারাই রয়েছেন সব কিছুর নেতৃত্বে। বাড়ির কাজকর্ম থেকে গোষ্ঠীর প্রশাসনিক দায়দায়িত্ব, সবই বহন করেন মহিলারা। তবে আশ্চর্যজনক ব্যাপারটি হল এদের বিয়ের রীতি।
এই জনগোষ্ঠীতে বিয়ের রীতিটা পরিচিত ছক থেকে একেবারেই আলাদা। মন্ত্র পড়া, আংটি বদল, প্রতিশ্রুতি— কোনও কিছুই হয় না। নেই শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে থাকার কোনও ব্যাপারও।
অ’বাক হওয়ার মতোই! কিন্তু এটাই বাস্তব মোসুও জনগোষ্ঠীর। তিব্বত সীমান্তের কাছে, চিনের ইয়ুনান ও সিচুয়ান প্রদেশের বাসিন্দা এই মোসুওরা নিজেদের ‘না’ নামেও পরিচয় দেয়।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার উচ্চতায় লেক লুগুর পাড়েই বাস করে এই গোষ্ঠী। বর্তামেন তাদের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এই জায়গা থেকে কাছের শহরের দূরত্ব সড়ক পথে প্রায় ঘণ্টা ছয়েক। প্রসঙ্গত, জনসংখ্যা এত কম বলে চিনের প্রশাসন এই গোষ্ঠীকে পরিচিতিই দেয় না।
আদতে মাতৃতান্ত্রিক এই গোষ্ঠীতে মহিলারাই রয়েছেন সব কিছুর নেতৃত্বে। বাড়ির কাজকর্ম থেকে গোষ্ঠীর প্রশাসনিক দায়দায়িত্ব, সবই বহন করেন মহিলারা। তবে আশ্চর্যজনক ব্যাপারটি হল এদের বিয়ের রীতি।
পাত্র-পাত্রী নিজেরাই নিজেদের পছন্দ করে। এবং পাত্র রাতে পাত্রীর বাড়িতেই থাকে। সকাল হলে সে ফিরে যায় নিজের বাড়ি। এমন ভাবেই স’ম্পর্ক চলে দু’জনের। যত দিন মনে হয়, তত দিন। কেউই কারও উপর কোনও জো’র খাটায় না। প্রসঙ্গত, যে ঘরে পাত্র-পাত্রী রাত কা’টায় তাকে ‘ফ্লাওয়ার রুম’ বলা হয়।
এক জন মহিলার সঙ্গে যে এক জন পুরুষেরই স’ম্পর্ক থাকে তা একেবারেই নয়। এবং মহিলা অন্তঃসত্ত্বা হলে, তার সন্তানের পিতৃ পরিচয়েরও প্রয়োজন হয় না। শি’শুটি বেড়ে ওঠে তার মায়ের কাছেই, মামা’র বাড়িতে।
সে দিক থেকে দেখতে গেলে, মোসুও সম্প্রদায়ের পুরুষ তার নিজের সন্তানের বদলে মানুষ করে ভাগ্নে-ভাগ্নিকেই। চৈনিক সমাজ মোসুও সম্প্রদায়কে খানিক হীন দৃষ্টিতেই দেখে। তারা মনে করে, এই সম্প্রদায় এখনও পড়ে রয়েছে আদিম যুগেই।