অ’বৈধ টাকা পাচারের অ’ভিযোগে গ্রে’প্তার হওয়া যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও ক্যাসিনো কা’ণ্ডে গ্রে’প্তার হওয়া ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ব’ন্দিদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন।
তারা কারাভ্যন্তরে নিজ নিজ ওয়ার্ডে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ব’ন্দিদের জন্য যে খাবারে আয়োজন করা হয় তারা সেটাই খেয়েছেন।
এদিকে, করো’নাভাই’রাস পরীক্ষার ভু’য়া প্রতিবেদন দেয়ার ঘটনায় আ’লোচিত জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইনের জীবনের প্রথম ঈদ পালন করেছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের একটি কক্ষে।
এছাড়াও করো’নাভাই’রাস পরীক্ষার ভু’য়া রিপোর্ট প্রস্তুতকারী রিজেন্ট হাসপাতা’লের মালিক মো. সাহেদ ওরফে শাহেদ করিম সাতক্ষীরায় তার বি’রুদ্ধে দায়ের হওয়া অ’স্ত্র আইনের মা’মলায় খুলনার র্যা’ব-৬ কার্যালয়ে রি’মান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের চলছে।
অন্যদিকে, পরিবার-পরিজন ছেড়ে ক্যাসিনো কা’ণ্ডে গ্রে’প্তার হওয়া সম্রাট, জি কে শামীম ও যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতা’লের বেডে পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করেছেন। সকালে তারা নিজ নিজ কক্ষে নামাজ আদায় করেছেন।
গতবছরও ঈদের সময় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে নিজস্ব কার্যালয়ে সপ্তাহব্যাপী অনেক গরীবদের ঈদ সামগ্রী ও টাকা বিতরণ করেছেন।
ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৯ সালের অক্টোবরে গ্রে’প্তার হন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। পরদিনই চিকিৎসকের পরাম’র্শে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতা’লে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ পর মা’দক, অ’স্ত্র ও অ’বৈধ সম্পদ অর্জনের মা’মলার আ’সামি সম্রাট’কে নেয়া হয় কাশিমপুর কারাগারে। গত বছরের ২৪ নভেম্বর বুকে ব্যথার কথা বলে কারাগারের চিকিৎসকের পরাম’র্শে আবারো তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
এছাড়াও অনিয়ম দু’র্নীতির অ’ভিযোগে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গ্রে’প্তার হন বহুল আ’লোচিত ঠিকাদার জি কে শামীম। অ’ভিযানের সময় বহু টাকা, মা’দক, অ’স্ত্র ও দেহরক্ষী নিয়ে শামীমকে গ্রে’প্তারের ঘটনা দেশে আলোচনার জন্ম দেয়। একই হাসপাতা’লে চিকিৎসাধীন আছেন তিনিও।
আমোদ-প্রমোদ আর তরুণীদের দিয়ে অ’নৈতিক ব্যবসার আয়ে বিলাসীভাবে চলা আ’লোচিত নারী নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া এখন কাশিমপুর কারাগারে। করো’নাভাই’রাস পরিস্থিতির কারণে র্যা’বের রি’মান্ডের মাঝপথে তাকে কাশিমপুর কারাগারের হাজতে পাঠানো হয়। দুই দফা ২০ দিনের রি’মান্ড শেষে ছোট্ট সেলে নিঃসঙ্গ পাপিয়ার আরো ১০ দিনের রি’মান্ডের অ’পেক্ষা।
কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, সংবেদনশীল আ’সামি হওয়ায় পাপিয়াকে রাখা হয়েছে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ একটি সেলে। তার সঙ্গে আর কোনো ব’ন্দি নেই। দিন-রাত একাকী’ কাটে ছোট্ট কক্ষের চার দেয়ালে। মাঝে মাঝে বই পড়তে দেখা যায় তাকে। বাকি সময় শুয়ে-বসে আর ঘুমিয়েই কা’টান একসময়ের পাঁচতারকা হোটেলের বিলাসী গ্রাহক পাপিয়া।
কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও কারাব’ন্দিদের জন্য নানা আয়োজন করেছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও। ব’ন্দিরা যার যার ভবনের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঈদের জামাত আদায় করেছেন। করো’না মহামা’রীতে কারাগারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছুই করা হচ্ছে। সকালে পায়েস ও মুড়ি দেয়া হয়েছে ব’ন্দিদের।
দুপুর বেলায় ব’ন্দিদের জন্য থাকবে সাদা ভাত, আলুর দম ও রুই মাছ। রাতে থাকবে পোলাও, মুরগী, গরুর মাংস, মিষ্টি ও সর্বশেষ পান সুপারি। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে ব’ন্দিদের ৩০০ গ্রাম করে মাংস দেয়া হবে। প্রতি সপ্তাহে ব’ন্দিদের যে মাংস দেয়া হয় সেটা থেকে ঈদ উপলক্ষে তার পরিমাণ দ্বিগুণ। ঈদুল ফিতরের মতো এবারও স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত বন্ধ আছে। তবে আগের নিয়মেই ব’ন্দিরা তাদের স্বজনদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে পারবে।
কারা অধিদপ্তর সূত্রে আরো জানা গেছে, শুধু ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নয়, সারা দেশের ৬৮টি কারাগারে একই ধরনের খাবার খাবেন ব’ন্দিরা। শুধুমাত্র ঈদের দিন তারা এ খাবার পাবেন।